বীমা হলো নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে জীবন, সম্পদ বা মালামালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কোন প্রতিষ্ঠানকে স্থানান্তর করা এবং এর মাধ্যমে ব্যক্তি বা বীমা প্রতিষ্ঠান অর্থের বিনিময়ে মক্কেলের আংশিক বা সমস্ত সম্ভাব্য ঝুঁকি গ্রহণ করে থাকে। কোন কোন বীমার ক্ষেত্রে এটি এক ধরনের বিনিয়োগও, অর্থাৎ ভবিষ্যতের নিশ্চয়তার কথা ভেবে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ বা প্রিমিয়াম জমা রাখা হবে যা গ্রাহক নির্দিষ্ট মেয়াদের পর ফেরত পাবে। আর এ সময়ের মধ্যে তিনি অসুস্থ বা মৃত্যুবরণ করলে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি চুক্তি অনুযায়ী সহায়তা দেবে।
বাংলাদেশে সাধারণত দুই ধরনের বীমা হয়--জীবন বীমা এবং সাধারণ বীমা। জীবন বীমায় একজন ব্যক্তি নিজের বা পরিবারের কোন সদস্যের জীবন বীমা করাতে পারেন। এতে বীমাকারী ব্যক্তির মৃত্যুর পর পরিবার অথবা নমিনি করা ব্যক্তিকে বীমাকৃত অর্থের পুরোটাই প্রদান করা হবে।
বাংলাদেশের অন্যতম বড় বীমা প্রতিষ্ঠান মেটলাইফের একজন এরিয়া ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম বলছেন বীমা করার জন্য অনুরোধ করলে অনেককেই প্রশ্ন করেন যে বীমার টাকা আদৌ পাওয়া যায় কি-না। ঢাকার একজন বেসরকারি চাকুরীজীবী নওরিন হাসান বলছেন তার কাছে মাঝে মধ্যে এজেন্টরা আসেন বীমা করাতে, কিন্তু তার এতে আস্থা নেই।
"বীমা ব্যাপারটাই আমার কাছে কেমন যেন মনে হয়। টাকাটা কাকে দিচ্ছি ও আসলেই এ টাকা আর ফেরত পাবো কি-না এটি আমি জানিনা। তাই ব্যাংকে ডিপিএস করি কিন্তু বীমা করিনি," বলছিলেন তিনি। এনজিও কর্মী সালমা বেগম বলছেন তার স্বামী কয়েক বছর বীমা করেছিলেন কিন্তু পরে জমা দেয়া টাকাটাই আর ফেরত পাননি। শেখ কবির হোসেন বলছেন এসব বিষয়ে দেখভালের জন্য একটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করেছে সরকার কিন্তু সেখানে লোকবল এত কম যে তাদের সেই সামর্থ্যই গড়ে ওঠেনি।
প্রসঙ্গত, বিমা অধিদপ্তর বিলুপ্ত করে সরকার ২০১১ সালে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (আইডিআরএ) গঠন করেছিলো। কিন্তু গত এগারো বছরেও প্রতিষ্ঠানটি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়াতে পারেনি। এর কর্মকর্তারা অবশ্য বলেছেন, তারা এখন সরকারী বীমা কোম্পানিগুলোর অটোমেশন করাতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কাজ করছেন। শেখ কবির হোসেন বলছেন এ প্রক্রিয়ায় বেসরকারি খাতকে রাখা না হওয়ায় এর খুবি বেশি সুফল সাধারণ মানুষ পাবে না। মেয়াদ পূর্তির পর প্রতিশ্রুত অর্থ না পেলে গ্রাহকের কী সুরক্ষা থাকছে তা জেনে নিতে হবে।